রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
2017 সাল থেকে প্রচুর সৃজনশীল সফল বোল্ড ভারতীয় ওয়েব সিরিজ তৈরি করছে।
প্রযোজক এবং পরিচালকরা যৌন সামগ্রী সহ প্রাপ্তবয়স্ক এবং পরিপক্ক থিমগুলি প্রদর্শন করতে নিজেকে প্রকাশ করার স্বাধীনতা উপভোগ করছেন।”
তার ফাঁকেই বাংলা হোক অথবা হিন্দি ভারতের প্রতিটি ভাষায় একের পর এক ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ওটিটি প্লাটফর্মে শুরু হয়েছে বোল্ড ওয়েব সিরিজ।
যা রীতিমতো পাল্লা দিচ্ছে বিদেশের পর্ন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে।
পর্ন বিষয়টায় যতই অনেকে নাক উঁচু করুন বা আইনি নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করুন, গোটা বিশ্বে পর্নোগ্রাফির ব্যবসা কয়েক লক্ষ কোটি টাকার৷ বহু মানুষের রুজি-রোজগার হয় অ্যাডাল্ট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে৷ পর্নোগ্রাফি দেখা খারাপ না ভালো, তা নিয়ে বিতর্ক আছে৷ থাকবে৷ তবে পর্ন ভিডিওতে যা দেখা যায়, তার পিছনে কিন্তু বহু মানুষের পরিশ্রম থাকে৷ থাকে কিছু ট্রেনিং, যা আদতে অভিনয়৷ এর বাইরে কিচ্ছু না৷ সব চরিত্রই কাল্পনিক৷

পর্ন ইন্ডাস্ট্রিই হল এমন এক বিনোদন শিল্প, যেখানে ছেলেদের থেকে মহিলাদের পারিশ্রমিক বেশি৷ এবং মেয়েদের পরিশ্রমও ছেলেদের থেকে বেশি করতে হয়৷
বাংলাতেও গত বছর দুই ধরে তৈরি হয়েছে হাজারের উপরে এমনই বোল্ড ওয়েব সিরিজ (Bold Adult Web series)।
তাতে অভিনয় করছে কলকাতা তথা বাংলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত জেলার ছেলেমেয়েরা।

কিন্তু পরিবার অথবা সমাজের পরিচিতরা এদেরকে দেখে নাক সিঁটকালেও তথ্য বলছে প্রতিদিন শুধুমাত্র বাংলাতে কয়েক লক্ষ মানুষ এই সমস্ত পর্ন মুভি দেখছেন। করছেন ডাউনলোড।
এমনই একজন অভিনেত্রী সুচরিতা ভট্টাচার্য। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি নেশা থাকায় নাম লিখিয়েছিলেন থিয়েটারে। কলকাতার বিভিন্ন নামকরা থিয়েটার মঞ্চে অভিনয় করেছেন বহু থিয়েটারে। থিয়েটারে যখন কাজ না থাকতো সেই সময় পার্টটাইম মডেলিং করেছেন।
তথাকথিত মডেলের মতো জিরো ফিগারের অধিকারিনী না হলেও চালু ট্রেন্ড মেনে শাড়ি মডেলিং করেছেন বহু।
কিন্তু সবকিছু গোলমাল হয়ে গিয়েছিল ২০২০ সালের মার্চে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার পরে। সিনেমা থিয়েটার থেকে শুরু করে যাবতীয় মডেলিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত কলা কুশলীদের।
তারপরেই রোজগারের টানে নাম লেখাতে বাধ্য হন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরি বোল্ড ওয়েব সিরিজে।
প্রশ্ন করেছিলাম, “থিয়েটারে অভিনয় করার পরে বোল্ড ওয়েব সিরিজে নগ্ন হয়ে যৌন দৃশ্যে অভিনয় করতে সংকোচ হয়নি কখনো?”
বিন্দুমাত্র না ভেবে সুচরিতার স্পষ্ট জবাব, “বেঁচে থাকা যেখানে সব থেকে বেশি জরুরি সেখানে সংকোচ আসে অনেক পরে। তার থেকেও বড় বিষয় বোল্ড ওয়েব সিরিজের যৌন তৃষ্যে অভিনয় করার আগে যখনই ছোট কোন সিরিয়াল অথবা সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রডিউসার অথবা কাস্টিং ডিরেক্টরদের কাছে গিয়েছি, প্রায় সকলেই আগে বিছানায় আমার শরীর পরীক্ষা করতে চেয়েছে। ক্যামেরার পিছনে শুধুমাত্র কাজ পাওয়ার জন্য প্রডিউসার অথবা কাস্টিং ডিরেক্টরদের সঙ্গে শোয়ার থেকে সম্মানের সঙ্গে ক্যামেরার সামনে যৌন দৃশ্যে অভিনয় করা অনেক ভালো।”


তার মানে টলিউডে কাস্টিং কাউচ আছে?

প্রশ্ন রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে ও রীতিমতো বিস্ফোরক তথ্য দিয়ে সুচরিতা জানালেন, “অভিনয়ের কথা তো ছেড়ে দিলাম – ছোট একটা মডেলিংয়ে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রডিউসারদের সঙ্গে শুতে হয় অথবা কলকাতার বাইরে গিয়ে হোটেলে রাত কাটাতে হয়। এটাই চালু সিস্টেম।”
Discussion about this post