সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
“অনেকেই মনোযোগ দিয়ে এই কর্মসূচি করছেন না। পার্টিটা তো আপনাদেরও। কর্মসূচি মনোযোগ দিয়ে করলে পঞ্চায়েতে এর ভাল প্রভাব আপনারা পাবেন। আমি জানি কারা কারা এই কর্মসূচি মনোযোগ দিয়ে করছেন না। আমাদের কাছে সব রকম রিপোর্ট আসছে। আমরা কিন্তু সেই নেতাদের চিহ্নিত করছি।” এভাবেই আজ কালীঘাটের মমতার বৈঠকে দলের নেতা ও নেত্রীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিদের রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ 24 পরগনার মত তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত জেলাগুলিতে বেশ কয়েকজন বিধায়ক এবং বিধায়িকা দিদির দূত কর্মসূচিতে ফাঁকি দিয়ে কখনো শারীরিক অসুস্থতা আবার কখনো দলীয় কাজে অন্যত্র যেতে হবে অজুহাত দিয়ে অঞ্চলে একদিন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে উঠতে পারেননি বহু এলাকায়।
এমনকি আইপ্যাক এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়িকা লাভলী মৈত্র কে সোনারপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায় যাবেন বলে লিখিত কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়ে কয়েকশো সাধারন মানুষ এবং দলীয় নেতা কর্মী উপস্থিত হওয়ার সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে কর্মসূচি বাতিল করেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক।
পরে এই কর্মসূচির তৃতীয় দফা ঘোষণা হওয়ার পরে কার্যত বাধ্য হয়ে চলতি সপ্তাহে একদিন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতে গেলেও সেখানে তুমুল গোষ্ঠী কোন্দলের মুখে পড়তে হয় বলে জানা গিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরে অভিযোগ করেন সোনারপুর গ্রামীণের বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা।
আবার পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি বিধানসভায় এই একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা বিধানসভা হতেও বিধায়ক সুব্রত মন্ডল দলীয় গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জন্য বেশ কিছু এলাকায় নাকি কর্মীদের অবজ্ঞা করে সেখানে যাননি বলে অভিযোগ এসেছে।
অপরদিকে, সাগরদিঘি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগের দিন ইদ্রিস আলী ও শেখ আখরুজ্জামান ট্রেনে বসে নিজেদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে সমালোচনা করছিলেন।
সেই খবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে এসে পৌঁছায়। তারপরই ইদ্রিস আলী ও শেখ আফরুজ্জামানকে এদিনের বৈঠকে বিশেষভাবে সতর্ক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পার্টি সম্পর্কে তোমরা কেন এরকম কথা বলবে? বৈঠকে এই দুই নেতার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এদিন অবশ্য বৈঠকে মমতা সাফ বলেন, ”আমরা একলাই চলব। আমি খুব শীঘ্রই বিভিন্ন রাজ্যে যাব। সেই রাজ্যগুলির আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলব। জাতীয় রাজনীতির কথা আপনাদের ভাবতে হবে না। আপনারা সংগঠনে মন দিন। অনেকেই বাড়িতে বসে থাকছেন। এটা মনে রাখবেন আমরা একলা চলো নীতিতেই লড়াই করব। বৈঠকে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
Discussion about this post