দু-দলের প্রথম একাদশই যেন শুরুতে চমকে দিল। বেঙ্গালুরু এফসির প্রথম একাদশে নেই সুনীল ছেত্রী।
অতিরিক্ত সময়ে ম্য়াচ গড়ালে, তাঁকে লাগবে। হয়তো সে কারণেই তাঁকে রাখেননি বিএফসি কোচ। কিন্তু ৩ মিনিটের মাথায় নাক ফেটে যায় শিবশক্তি নারায়ণের। তিনি মাঠ ছাড়তেই নামিয়ে দেওয়া হল সুনীলকে।
বহু যুদ্ধের সৈনিক। চাপে রাখতে জানেন বিপক্ষের রক্ষণকে। আর জানেন, আচমকাই খেলা ঘুরিয়ে দিতে। সুনীল নিরাশ করলেন না। টিম যখন প্রবল চাপে কোণঠাসা, মাঠের দখল নিয়েছে হুয়ান ফেরান্দোর টিম, তখনই পেনাল্টি থেকে ১-১ সুনীলের।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ২০২২-২৩ মরসুমের ফাইনাল মুখোমুখি হয়েছিল এটিকে মোহনবাগান ও বেঙ্গালুরু এফসি। মরসুমের শুরুতে বেঙ্গালুরু এফসির পারফরম্য়ান্স স্বস্তির ছিল না। ক্রমশ গিয়ার শিফ্ট করে তারা।
অবশেষে লিগ শিল্ড জয়ী মুম্বই সিটি এফসিকে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল বেঙ্গালুরু। অন্য দিকে, এটিকে মোহনবাগান টুর্নামেন্টের মাঝপথে খেই হারিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে প্লে-অফ নিশ্চিত করা থেকে সেমিফাইনাল।
গত বারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে দুই লেগ মিলিয়ে নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য়। অতিরিক্ত সময়েও নিষ্পত্তি না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। স্নায়ুর চাপ সামলে টাইব্রেকারে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল এটিকে মোহনবাগান। ফাইনালেও তেমনই হল।
তবে গোলশূন্য নয়। নির্ধারিত সময় এবং অতিরিক্ত সময়েও স্কোরলাইন ২-২ থাকায় ম্যাচের নিষ্পত্তি টাইব্রেকারে।৪-৩ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন সবুজ মেরুন।
সংযুক্তিকরণের পর দ্বিতীয় বার ফাইনাল খেলতে নেমেছিল এটিকে মোহনবাগান। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই অন্যতম ডিরেক্টরের ঘোষণা, মোহনবাগান নামের সামনে থেকে সরছে এটিকে। এ বার থেকে সবুজ মেরুন খেলবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস নামে।
মোহনবাগানের এ বারের টিমে ভারসাম্য অনেক বেশি। অভিজ্ঞ ফুটবলারদের পাশাপাশি তরুণ্যও রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাগানে বেশ কয়েক জন এমন ফুটবলার রয়েছেন, যাঁরা হঠাৎই বদলে দিতে পারেন খেলা। হলও তাই। ৮৫ মিনিটে বড় বক্সের ঠিক সামনে ফাউল করেন জোহানোভিচ। কিন্তু ওটা পেনাল্টি ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। বড় বক্সের লাইনে ফাউল করেন পাবলো পেরেজ। কিয়ান নাসিরি পড়েন বক্সের ভিতরে। রেফারি কিন্তু পেনাল্টিই দিলেন আবার। পেত্রাতোস ফের পেনাল্টি থেকে গোল করে ২-২ করেন। এক্সট্রা টাইমের দ্বিতীয়ার্ধেই খেলাটা শেষ করতে পারতেন মনবীর সিং। পেত্রাতোসের দুরন্ত সেন্টারটা প্লেসিংয়ে ৩-২ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি ড্রপ হেডে গোল করতে গিয়ে মিস করলেন।
সুযোগ তৈরি, নষ্ট— এ সব তো থাকবেই। খেলার অঙ্গ। টাইব্রেকারে যদি বিশাল কাইথের মতো কেউ ম্যাজিক দেখান, তা হলে এ সব ঢাকা পড়ে যায়। সেমিফাইনালে হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে কাইথই জিতিয়েছিলেন টাইব্রেকারে। আইএসএল ফাইনালেও তাই হল।
Discussion about this post