সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
প্রতি ৫ জন মহিলার মধ্যে ৩ জন মহিলা এখন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে ভুগছেন। এমনকী কিশোরীদের মধ্যেও বৃদ্ধি পেয়েছে এই সমস্যা।
চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেন এই রোগের পিছনে লাইফস্টাইল ও দূষণ দায়ী। অনেকের ক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণেও পিসিওএস-এর সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের গণ্ডগোলের কারণেও মহিলাদের দেহে বাসা বাঁধে পিসিওএস। এন্ডোক্রিন সিস্টেমের ভারসাম্যহীনতার কারণে মূলত এই রোগ দেখা দেয়।
পিসিওএস-এর সমস্যা হলে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে থাকে। এর জেরে ডিম্বাশয়ে সিস্ট তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে পিসিওএস গর্ভধারণের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব ছাড়াও পিসিওএস থাকলে ওজন বাড়তে থাকে। পাশাপাশি মুখে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে লোমের আধিক্য বাড়তে থাকে। এমনকী মুখে ও পিঠে ব্রণ হতে থাকে। তার সঙ্গে চুল পড়া বাড়ে এবং চুল পাতলা হয়ে যায়।
কিন্তু সমস্যা হল, পিসিওএস কোনও দিন সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয় না। তবে, আপনি উপসর্গগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
নিয়মিত যোগব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া করলেই পিসিওএস-এর উপসর্গগুলো মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে করা যাবে। এছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি পিসিওএস-এর উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
গোটা শস্য ও ফল- ওটস, ডালিয়ার মতো গোটা শস্য ডায়েটে রাখুন। এর মধ্যে ফাইবার রয়েছে। তার সঙ্গে তাজা শাকসবজি ও ফল খান। যেহেতু পিসিওএস হলে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ঘটে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকে, তাই এই ধরনের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী।
কফির পরিমাণ কমান-
কফির মধ্যে ক্যাফেইন রয়েছে। এটি ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এর বদলে আপনি ভেষজ চা, গ্রিন টি, কম্বুচা খেতে পারেন। এগুলো পিসিওএস-এর উপসর্গকে নিয়ন্ত্রণে করতে সাহায্য করবে।
দারুচিনি ও হলুদ-
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে দারুচিনি। তাছাড়া দারুচিনি রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে, হলুদের মধ্যে কারকিউমিন যৌগ রয়েছে। এই যৌগটি শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে।
প্রোবায়োটিক- প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার শুধু আপনার হজম ও অন্ত্রের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে, তা নয়। পিসিওএস-এর উপসর্গকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার দারুণ উপযোগী। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার সেক্স হরমোন অ্যান্ড্রোজেন ও ইস্ট্রোজেনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হতে দেবেন না- পিসিওএস-এর সমস্যায় ভুগলে ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি ভীষণ জরুরি।
এগুলো যেমন হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে, তেমনই একাধিক রোগের হাত থেকে নারীদেহকে রক্ষা করে।
Discussion about this post