বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের কয়েকটি ধারা অনুযায়ী নতুন যে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। ৩ মে যুক্তরাষ্ট্র নতুন এই ভিসা নীতির বিষয়ে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন প্রথমে টুইট করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে এ বিষয়ে তাঁর বিস্তারিত বিবৃতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনেও বাংলাদেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি চালুর বিষয়টি তুলে ধরেন। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে: ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার চর্চাকে সহিংসতার মাধ্যমে বাধাদান। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক দল, ভোটার, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখতে বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা নিষেধাজ্ঞা নয়। বিএনপির উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, তারা নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময় যে সহিংসতা চালিয়েছে, সেটার জন্যও ভিসা বিধিনিষেধ আসতে পারে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই এই ভিসা নীতিতে সরকারের উদ্বেগের কিছু নেই।’ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পরবর্তী সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রত্যাশার কথা বারবার বলে আসছে। বিশেষ করে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ঢাকা ও ওয়াশিংটনে দুই দেশের মধ্যে নানা পর্যায়ের যেসব বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের এই প্রত্যাশার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন টুইটে লিখেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আমি আজ নতুন একটি ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে আমরা সক্ষম হব।’ বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।’এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রসংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, তাঁরা কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি। তবে এসব ধারার অধীনে আইনসম্মতভাবে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছেন। বাংলাদেশের জনগণকে এই বার্তা দিতে চেয়েছেন যে তাঁরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে এবং এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।আরেক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের যেকোনো ব্যক্তিকে এই বার্তা দিতে চেয়েছি যে আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’প্রশ্নোত্তরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে এটা একটি বার্তা যে আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারী ব্যক্তিকে জবাবদিহির আওতায় আনার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে।’নির্বাচনে অনিয়ম প্রমাণিত হলে এই ভিসা নীতির আওতায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন ম্যাথু মিলার।
Kolkata Delhi Vande Bharat : স্লিপার কোচের বন্দে ভারত প্রথম ছুটতে পারে কলকাতা-দিল্লি রুটে
স্লিপার কোচ যুক্ত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস প্রথম চলতে পারে নয়াদিল্লি-কলকাতা এবং নয়াদিল্লি-মুম্বই রুটে। প্রাথমিকভাবে এই দু'টি রুটকেই বেছে নিতে চাইছে...
Read more
Discussion about this post