May 18, 2024
Bangladesh

Rajshahi Electricity Crisis : রাজশাহীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সেচ সংকট, বোরো চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা

post-img

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী, বাংলাদেশ।

রাজশাহীতে চলছে তাপদাহ। মাঝারি তাপদাহ কিছুটা কমে মৃদু পর্যায়ে নামলেও এখনো সূর্য তার প্রখরতা ছড়াচ্ছে। আর গরমের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা। পানি পেতে রাত জেগে গভীর নলকূপের কাছেই থাকতে হচ্ছে তাদের। ঠিকমতো পানি না পেয়ে অনেক জায়গায় জমি গেছে ফেটে। ফলে উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের বোরো ধান নিয়ে উদ্বিগ্ন।

সোমবার (৮ এপ্রিল) রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রবিবার তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এদিন খরতাপের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বাড়তি চাপ তৈরি করে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহী জেলায় তিন লাখ ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে বোরো ধান ফুল আসা শুরু হওয়ায় তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচাতে কৃষকদের ক্ষেতে ৩-৪ ইঞ্চি পানি রাখতে বলেছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, বারবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে তারা তাদের বোরো ক্ষেতে সপ্তাহে একবার সেচ দিতে পারে না। যদিও বোরো ক্ষেতে দুদিনের বিরতিতে সেচ দেওয়া দরকার।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শেখেরপাড়া গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানান, ১৪-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় তারা বোরো ক্ষেত নিয়ে খুবই চিন্তিত। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জমিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ওই এলাকার কৃষকদের বোরো ক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য সিরিয়াল পেতে গভীর নলকূপে বসে রাত কাটাতে হচ্ছে।

বাগমারা উপজেলার বালানগর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান বলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাঁচ বিঘা বোরো জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য নিজের একটি আধা গভীর নলকূপ স্থাপন করেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাটে গভীর নলকূপের কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, সাত থেকে নয় মিনিট বিরতির পর প্রতিবার দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় শনিবার সকাল থেকে দুই ঘণ্টাও গভীর নলকূপ চালাতে পারেননি তিনি।

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বিএমডিএ গভীর নলকূপ অপারেটর মশিউর রহমান বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন ১০-১২ বার বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করেছে। এ কারণে তাকে ২৪ ঘণ্টা পাম্পটি চালাতে হচ্ছে। শুক্রবার রাতে পাঁচবার বিদ্যুৎ গেছে। তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত গরমে জমির পানি শুকিয়ে যাওয়ায়, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে সিরিয়াল ম্যানেজ করা আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফুল ফোটার সময় বোরো ক্ষেতে পানি ধরে রাখা বাধ্যতামূলক। যদি পানি ধরে রাখা না যায় এবং ফাটল দেখা দেয় তাহলে তা বোরো উৎপাদনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

লোডশেডিংয়ের বিষয়ে রাজশাহী নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) প্রধান প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, রাজশাহী শহরে বিদ্যুতের চাহিদা ৯০ মেগাওয়াট। আমরা পাচ্ছিও ৯০ মেগাওয়াট। তবে রাজশাহী বিভাগের নেসকোর অংশে ১৫ মেগাওয়াট ও পল্লিবিদ্যুতের অংশে ৬০ মেগাওয়াট লোডশেডিং আছে। তিনি বলেন, ইন্ডিয়াতে ডেডিকেটেড লাইন আছে। আমাদের নেই। এক লাইনেই বাসাবাড়ি, সেচ, মিল সব আছে। শুধু সেচ হলে তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্ত আমাদের তা নেই। এজন্য সমস্যাটা হচ্ছে। মূলত আবহাওয়া, রমজান ও ইরি মৌসুমের কারণে চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য সমস্যাটা হচ্ছে। তবে এটি সমাধান হবে। কবে হবে সেটি বলা যাবে না। এটি আমার হাই অথরিটিরাই বলতে পারবে।

Related Post

About Us

24 Hour Online Bengali & English News Portal Registered under Government of India. Head Office in Kokata.

Need Help? Connect Now