শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
কুণাল ঘোষের ডানা ছাঁটলো তৃণমূল। দল বিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কুনাল ঘোষকে। বুধবার একটি বিবৃতি জারি করে এই ঘোষণা করেছে রাজ্যের শাসকদল। একই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়েছে, কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তৃণমূলের তরফে বুধবার বিকেলে জারি করা ওই বিবৃতিতে সই রয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়েনের।
বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ''সম্প্রতি কুণাল ঘোষ এমন অনেক কথা বলছিলেন যা দলের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই এটা বোঝানো অত্যন্ত দরকার ছিল যে, উনি যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ ভাবে তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। এর সঙ্গে দলের ভাবনার কোনও সম্পর্ক নেই।'' তৃণমূল ওই বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, এর আগে দলের মুখপাত্র পদ থেকেও কুণালকে সরানো হয়েছিল। এ বার তাঁকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও অপসারণ করা হল।
যার জন্য অনেকটাই দায়ী আজ সকালের ঘটনা।
উলটপুরাণ। পাশাপাশি বসলেন তৃণমূল ছেড়ে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হওয়া তাপস রায় এবং তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। বিজেপির তাপসকে পাশে বসিয়ে তৃণমূলের কুণাল তৃণমূলের কর্মীদের উদ্দেশেই বার্তা দিলেন, দলের কেউ যেন ছাপ্পা ভোট দেওয়ার চেষ্টা না করেন। শান্ত এলাকায় যেন শান্তিতে ভোট হয়। মানুষই ঠিক করে নেবেন কে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী।
বুধবার মে দিবসে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল কলকাতার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ক্লাব। শ্যামসুন্দরতলায় অনুষ্ঠিত সেই কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন কুণাল। কুণাল যখন পৌঁছন তখন মঞ্চে বসে রয়েছেন তাপস এবং উত্তর কলকাতার বিজেপি জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ। জানা গিয়েছে, কুণাল পৌঁছনোর আগেই তাপসের বলা হয়ে গিয়েছিল।
বক্তৃতা করতে উঠে কুণাল বলেন, ''জনপ্রতিনিধি তাপস রায়ের সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। উনি যত দিন জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তত দিন মানুষকে পরিষেবা দিয়েছেন। দিন-রাত তাঁর দরজা মানুষের জন্য খোলা থাকত। মানুষ যখন তাঁকে ডেকেছেন তখন পেয়েছেন।''
এর পরে কুণাল এ-ও বলেন, ''আমরা তাপস রায়কে এক পরিবারে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পারিনি। আজকে উনি প্রার্থী। কিন্তু অন্য দলের। আমাদের দলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা আমাদের দলের প্রার্থীর জন্য কাজ করব। তাপসদার দলের কর্মীরা তাঁর জন্য কাজ করবেন।''
এখানে থেমে গেলে একটা কথা ছিল। কিন্তু কুণাল থামেননি। তৃণমূল নেতা বলেন, ''এখানে কোনও ছাপ্পা ভোট হবে না। যাঁর ভোট তাঁকে দিতে দিন। মানুষ ঠিক করে নিন, কে প্রকৃত প্রার্থী। যদি কোথাও কোনও ছাপ্পা হয়, জেনে রেখে দেবেন তৃণমূল নেতৃত্বই বারণ করবে, কোনও অবস্থায়, কোনও বুথে মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটা ভোটও যেন না পড়ে।''