সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যেখানে এখনো ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটেনি অথবা ছোট ছোট বাচ্চাদের কাছে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়নি - সেই সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাংলার প্রতিটি প্রান্তে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুল।
যার অন্যতম কর্ণধার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা শিল্পপতি ডক্টর পার্থ সারথী গাঙ্গুলী। সেই মিশন মাথায় রেখেই দক্ষিণ ও উত্তর 24 পরগনার প্রত্যন্ত হোটর ও মিনাখাঁর পরে ক্যানিংয়ে ছোট ছোট শিশুদের জন্য নতুন স্কুল খুললেন তিনি।
বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা যেভাবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং লাগাম ছাড়া হয়ে চলেছে বাংলা তথা দেশের সর্বত্রই সেই স্রোতে গা না ভাসিয়ে শুধুমাত্র লাভের কথা না ভেবে বাংলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে বিশেষ করে যেখানকার মানুষের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি খুব বেশি সচ্ছল নয়, মূলত সেই এলাকাগুলোতেই প্রথমে স্কুল খোলার তৈরির কাজ শুরু করেছেন ডক্টর পার্থ সারথী গাঙ্গুলী।
Jyoti Shishu Vihar Canning : ক্যানিংয়ে চালু হল ইংরেজি মাধ্যম CBSE স্কুল জ্যোতি শিশু বিহার
তাঁর মূল মন্ত্র হলো সাধ্যের মধ্যে অল্প খরচে বাবা-মায়েরা যেন নিজের সন্তানকে সঠিকভাবে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারেন।
তবে শুধুমাত্র পড়াশুনা নয়। নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজের উপরে যে জোর দেওয়া হবে, সেই বিষয়টি জানিয়ে দিলেন জ্যোতি শিশু বিহার ক্যানিংয়ের প্রধান শিক্ষিকা অনন্যা নাগ।
তিনি জানান, "ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যারাটে যোগ ব্যায়ামের মত বিভিন্ন ধরনের বিষয় শেখানো হবে আমাদের স্কুল ক্যাম্পাসেই।"
ক্যানিং অথবা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার আরো প্রত্যন্ত এলাকায় সুন্দরবনের লাগোয়া এলাকায় জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের হাইস্কুল খোলার বিষয়েও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন ডক্টর পার্থ সারথি গাঙ্গুলী।
পার্থ বাবু বলেন সুন্দরবনের যে সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকায় ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের অভাব রয়েছে, যেমন ক্যানিং বা বাসন্তী বা আরো প্রত্যন্ত এলাকায় - সেই সমস্ত এলাকাতে স্কুল খোলার চেষ্টা করছি আমরা।"
তবে গোটা বাংলা জুড়ে যেভাবে অন্তত ১০০টি জ্যোতি শিশু বিহার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে জ্যোতির্ময় এডুকেশন গ্রুপ সেই অনুপাতে যোগ্য শিক্ষিকার অভাব রয়েছে বাংলায় অনেকটাই। এই চাহিদা এবং যোগানের মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য আগামী দিনে নিজেদের মতো করে সিবিএসই সিলেবাস অনুসরণ করে শিক্ষিকাদের শিক্ষিত করে তোলার মতো দুর্দান্ত উদ্যোগ নিয়েছে জ্যোতির্ময় গ্রুপ। এই প্রসঙ্গে জ্যোতি শিশু বিহার স্কুলগুলির দায়িত্বে থাকা প্রিন্সিপাল পামেলা মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছি আমাদের যতগুলি স্কুল তৈরি হবে সেখানে যারা শিক্ষকতা করবেন তাদেরকে আমরাই সিবিএসই কারিকুলার মেনে প্রশিক্ষণ দেব।"
জ্যোতি শিশু বিহারের ক্যানিং শাখা মূল ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে ঘাসিয়াড়া এবং মিনাখাঁর মত জায়গাতে যে সমস্ত স্কুলগুলি তৈরি হচ্ছে তার প্রত্যেকটিতেই ক্যারাটে এবং যোগ ব্যায়াম শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছেন আন্তর্জাতিক স্তরে ক্যারাটেতে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করা বিশিষ্ট ক্যারাটেকার শিহান প্রকাশ থাপা। তিনি জানান,
"স্কুল স্তর থেকেই যোগ ব্যায়াম বা আত্মরক্ষার প্রয়োজনে ক্যারাটে শেখার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ইতিমধ্যেই আমরা জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের এবং জ্যোতিষি সুরি হারের সবকটি ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আশা করছি ক্যানিংয়েও অভিভাবক অভিভাবিকা কারা তাদের সন্তানদের পড়াশোনার পাশাপাশি শরীর চর্চাতেও বাড়তি উৎসাহ দেবেন।"
ক্যানিং থানার পাশেই আনুষ্ঠানিকভাবে জ্যোতি শিশু বিহারের নতুন স্কুল উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণ করে দারোদ্ঘাটন করেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজেরা। উপস্থিত ছিলেন ক্যানিং তথা ২৪ পরগনার বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিল্পী ক্ষিতীশ বিশাল।
পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন জ্যোতি শিশু বিহারের ঘাসিয়াড়া ক্যাম্পাসের প্রধান শিক্ষিকা এবং জ্যোতি শিশু বিহারের মিনাখাঁ ক্যাম্পাসের প্রধান শিক্ষিকাও।