শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের ফরেনসিক রিপোর্ট আদালতে পেশ করল ইডি। অন্যদিকে লিপস অ্যান্ড বাউন্সের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার খবরও পেশ হয়েছে। কিন্তু বাজেয়াপ্তকরণের তালিকা বড়ই সংক্ষিপ্ত বলে মন্তব্য করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ১২ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ইডির রিপোর্টে বলা হয়েছে, কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা ফরেনসিক রিপোর্টের সঙ্গে মিলে গিয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলাকালীন নম জড়িয়ে যান ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ নামে এক সংস্থার। সেই সংস্থার অফিসে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা, একাধিক ব্যক্তিকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়, যাঁদের ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর সঙ্গে যুক্ত। সেই সংস্থার কত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সে কথা বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জানাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে ইডি জানায়, মোট ১৩৪ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ কথা শুনে বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন করেন, দুর্নীতির টাকার অঙ্কের অনুপাতে এটা খুব নগণ্য বলে মনে হচ্ছে না? তিনি যে এই রিপোর্টে খুব একটা সন্তুষ্ট নন, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি। এদিন মাত্র পাঁচ পাতার একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেয় ইডি। তার মধ্যে তিন পাতা জুড়ে শুধুই 'কাকু'র কণ্ঠস্বরের তথ্য। বাকি দু'পাতায় এই মামলায় ইডির সার্বিক তদন্তের রিপোর্ট। তাতেই অসন্তুষ্ট বিচারপতি। ইডির তদন্তের রিপোর্ট এত সংক্ষিপ্ত কেন? জানতে চান বিচারপতি সিনহা। তিনি বলেন, 'লিপ্স আন্ডস বাউন্স এর ইডি রিপোর্ট অসমাপ্ত।
ইডি-র উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “অভিযোগ উঠেছে যে চাকরি বিক্রি হয়েছে। এটা একটা স্ক্যাম। সত্যিই কি চাকরি বিক্রি হয়েছে? তার কি কোনও প্রমাণ আপনারা পেয়েছেন? টাকার উৎস জানতে আপনারা কি কোনও পদক্ষেপ করেছেন?” ইডি জানায়, প্রতিদিনই তদন্তে এগিয়ে যাচ্ছে তারা।
এই মামলায় এদিন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যের নামও উঠে আসে। ইডি জানায়, প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তাই শুনানি হচ্ছে না। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে দাবি করেছে ইডি। আগামী ১২ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ফের রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহার বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর নামে থাকা যে সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তার মধ্যে কালীঘাট রোডের দুটি বহুতল রয়েছে বলে চলতি বছরের শুরুর দিকে জানিয়েছিল ইডি। ইডি-র দেওয়া তথ্য বলছে, এর মধ্যে একটি বাড়ি কিনেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ও অপরটি কিনেছিলেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়।